এসেন্স
পাগলাবাবার আশ্রম বোধহয় এখনও আছে পুরুলিয়া শহরে। সামনে একটা বড় বট বা অশথ্ব গাছ খেয়াল পড়ে না। আমি কোনোওকালেই প্রথাগত ঈশ্বর ভক্ত নই যে আশ্রমের কাজকারবার আমায় টানবে। তবুও এই দীর্ঘ সময় পেরিয়ে পাগলাবাবার আশ্রমের কথা মনে পড়ে বাউল গানের কথা ভেবে। পাগলাবাবা ছিলেন রাগী বলেই শোনাকথা। বছরে একবার বাউল-গানের মেলার আয়োজন করা ছিল তার আশ্রমের রীতি। সে সত্যিই ছিল মেলা। কত লোকের সমাগম ছিল এখন হালকা স্মৃতির ক্ষয় ছাড়া আর কিছুই নয়।
শুধু মনে পড়ে বাউল-গানের মেলার খবরের উত্তেজনা। তখন কতই বা বয়স হবে! এখনোও টাটকা তাজা ঝরঝরে স্মৃতি। কতই না বাউল-- শ্রী পূর্ণদাস বাউল থেকে শুরু করে নাম না জানা কতই বাউলের সমন্বয়! সেই গানের তালে নাচ, শরীর দুলিয়ে মনের আনন্দে একতারার সাথে সাথ মিলিয়ে। কোনোও ট্রুপ-এর প্রয়োজন হোত না। সকলে বিভোর হয়ে দেখত-শুনত। বাউল-একতারা-ঈশ্বরবিশ্বাস! এই ছিল কম্বিনেশান।
এতো ছিল বাউল-মেলা। ঝক্কি পোয়াতে হতো বাপি-মা'কে। এখনও ঝকঝকে ছবি ভাসে-- আমার জিদ করে কেঁদে-কেটে একতারার জোগাড় আর সুর করে নেচে-নেচে " গোলেমালে গোলেমালে পিরিত কইর না!!!" নিজের মনে, নিজ খেয়ালে।
তখন কিইবা বয়স-- ক্লাস টু অথবা থ্রি। পিরিতই বা কি জিনিস কেইবা জানে! এবয়সেই বোঝা গেল না।
বড় হলে একবার ভবা পাগলার স্মরণে এক অনুষ্ঠানে হাজির থাকার সুযোগ হয়েছিল বীরভূম বা মুর্শিদাবাদের কোনোও এক প্রতন্ত্য গ্রামে। যিনি সুযোগকর্তা তার কোনোও খবর এখন আর আমার কাছে নেই। প্রানবন্ত মানুষ দীপঙ্করদা। এক্স-নেভি ম্যান। প্রচুর ঘোরা-দেখা এবং সব মিলিয়ে বোদ্ধা মানুষ। লোকনাথবাবা ও ভবাপাগলার ফোলোয়ার। বহুদিনবাদে বাউল গানের অনুষ্ঠানে ছেলেবেলার স্মৃতি হাতড়ানোর সৌভাগ্য হয়েছিল। কিন্তু মেলেনি, ছেলেবেলা কখনও মেলেনা।
গতকয়েকদিন নার্গিস দালালের একটি বই " স্কিন ডিপ " পড়ছিলাম। পপুলার লেখিকা নন, কিন্তু আমার ভীষণ প্রিয়। প্রথম পড়ি ছোট গল্পের সংকলন- দি নূ্যড। বেশ ভাল লেগেছিল। তারই লেখার মাঝে পেলাম এক ছোট্ট ফিলজফি--- এসেন্স, হ্যাঁ এসেন্সটাই থেকে যায়... বয়ে যায় এক থেকে বহুতে। কথাটা ঠিক একইভাবে বলা নয়। আমি বললাম আমার মত করে, নিজের বিশ্বাস-উপলব্ধি থেকে।
এখন আমার ছেলেকে দেখি মোবাইল বা টিভিতে গান শুনে বাসন-কোসন নিয়ে বাজনা শুরু করেছে। সেই একই নাচ-গান-আনন্দ। আমায় ভিন্ন ভিন্ন সময় বিভিন্ন ইন্স্ট্রুমেন্ট দেখিয়ে বলা হয়-- পাপা এটা কিনে দেবে, হ্যাঁ।
বলার ভঙ্গিমায় সেই একই এসেন্স-এর ছাপ । কেউ তো শিখিয়ে দেয় নি মা-হারা ছোট্ট বাচ্চাকে -- বছর দুয়েকের বাচ্চারতো মা'র এসেন্স মনে রাখা সম্ভব নয়।
তবুও, এসেন্স... সে তো বয়ে যাবেই মা'র থেকে সন্তানে।
বাতাসে ভাসে কোনোও এক সিনেমায় দেখা ডায়ালগ--- উই আর নট বর্ন, উই আর গ্রোন..... ধাঁধা, সব ধাঁধা। একেক সময় মনে হয় সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। স্বতন্ত্র শব্দটাই বোধহয় একটা ফাঁকি।
শুধু মনে পড়ে বাউল-গানের মেলার খবরের উত্তেজনা। তখন কতই বা বয়স হবে! এখনোও টাটকা তাজা ঝরঝরে স্মৃতি। কতই না বাউল-- শ্রী পূর্ণদাস বাউল থেকে শুরু করে নাম না জানা কতই বাউলের সমন্বয়! সেই গানের তালে নাচ, শরীর দুলিয়ে মনের আনন্দে একতারার সাথে সাথ মিলিয়ে। কোনোও ট্রুপ-এর প্রয়োজন হোত না। সকলে বিভোর হয়ে দেখত-শুনত। বাউল-একতারা-ঈশ্বরবিশ্বাস! এই ছিল কম্বিনেশান।
এতো ছিল বাউল-মেলা। ঝক্কি পোয়াতে হতো বাপি-মা'কে। এখনও ঝকঝকে ছবি ভাসে-- আমার জিদ করে কেঁদে-কেটে একতারার জোগাড় আর সুর করে নেচে-নেচে " গোলেমালে গোলেমালে পিরিত কইর না!!!" নিজের মনে, নিজ খেয়ালে।
তখন কিইবা বয়স-- ক্লাস টু অথবা থ্রি। পিরিতই বা কি জিনিস কেইবা জানে! এবয়সেই বোঝা গেল না।
বড় হলে একবার ভবা পাগলার স্মরণে এক অনুষ্ঠানে হাজির থাকার সুযোগ হয়েছিল বীরভূম বা মুর্শিদাবাদের কোনোও এক প্রতন্ত্য গ্রামে। যিনি সুযোগকর্তা তার কোনোও খবর এখন আর আমার কাছে নেই। প্রানবন্ত মানুষ দীপঙ্করদা। এক্স-নেভি ম্যান। প্রচুর ঘোরা-দেখা এবং সব মিলিয়ে বোদ্ধা মানুষ। লোকনাথবাবা ও ভবাপাগলার ফোলোয়ার। বহুদিনবাদে বাউল গানের অনুষ্ঠানে ছেলেবেলার স্মৃতি হাতড়ানোর সৌভাগ্য হয়েছিল। কিন্তু মেলেনি, ছেলেবেলা কখনও মেলেনা।
গতকয়েকদিন নার্গিস দালালের একটি বই " স্কিন ডিপ " পড়ছিলাম। পপুলার লেখিকা নন, কিন্তু আমার ভীষণ প্রিয়। প্রথম পড়ি ছোট গল্পের সংকলন- দি নূ্যড। বেশ ভাল লেগেছিল। তারই লেখার মাঝে পেলাম এক ছোট্ট ফিলজফি--- এসেন্স, হ্যাঁ এসেন্সটাই থেকে যায়... বয়ে যায় এক থেকে বহুতে। কথাটা ঠিক একইভাবে বলা নয়। আমি বললাম আমার মত করে, নিজের বিশ্বাস-উপলব্ধি থেকে।
এখন আমার ছেলেকে দেখি মোবাইল বা টিভিতে গান শুনে বাসন-কোসন নিয়ে বাজনা শুরু করেছে। সেই একই নাচ-গান-আনন্দ। আমায় ভিন্ন ভিন্ন সময় বিভিন্ন ইন্স্ট্রুমেন্ট দেখিয়ে বলা হয়-- পাপা এটা কিনে দেবে, হ্যাঁ।
বলার ভঙ্গিমায় সেই একই এসেন্স-এর ছাপ । কেউ তো শিখিয়ে দেয় নি মা-হারা ছোট্ট বাচ্চাকে -- বছর দুয়েকের বাচ্চারতো মা'র এসেন্স মনে রাখা সম্ভব নয়।
তবুও, এসেন্স... সে তো বয়ে যাবেই মা'র থেকে সন্তানে।
বাতাসে ভাসে কোনোও এক সিনেমায় দেখা ডায়ালগ--- উই আর নট বর্ন, উই আর গ্রোন..... ধাঁধা, সব ধাঁধা। একেক সময় মনে হয় সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। স্বতন্ত্র শব্দটাই বোধহয় একটা ফাঁকি।
Comments