.... তাহাদের উদ্দেশ্যে
গত কয়েকদিন টিভির পর্দায় সেই নব্বই-এর দশকের শুরুতে দেখা ভিসুয়্যাল দেখলাম। সে ছিল ইরাক-ইরান যুদ্ধ, আর এহলো ইজরাইল-প্যালেস্তাইন বোমাবর্ষণের খেলা। হ্যাঁ, আমি খেলায় বলব কারন এসবই কিছু মুষ্টিমেয় অ- মানুষের (মানুষ বলা যায় কি?) খেলার ফসল। টিভিতে রামায়ন-মহাভারত দেখার সময় বিপুল আনন্দ পেয়েছি। সে ছিল কমবয়সের আনন্দ। কতই রকমের বান, কতই বা স্পেশাল শক্তি। কতই বা তার প্রকারভেদ!! ইরাক-ইরাণ যুদ্ধে দেখেছিলাম তারই ঝলক। আর কেঁদেছিলাম ভেতরে-ভেতরে, শিউরে উঠেছিলাম ধংসের উন্মত্ততায়। কি করে রাষ্ট্রনায়কেরা পারেন ছোটো-ছোটো শিশুদের ওপর অত্যাচার চালাতে!
আর এই টিভির পর্দায় এখন যা দেখছি তার জন্য কাউকে দোষ দিই না, কিন্তু এ দোষ সমগ্র মানবজাতির, মানবসমাজের। এ পরাজয় মানবিকতার। এ পরাজয় শুভ মানসিকতার। ছেলেবেলায় মা-ঠাকুমারা জন্মদিনে আশীর্বাদ করে বলতেন - যেন থাকে দুধেভাতে। অর্থ যেন ভাল থাকে। প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে - এর পরেও দুধেভাতে থাকা যায়?
গাজার সেই বাচ্চাটির সরল মুখ কি ভাবছে? কিইবা বলছে? কিইবা তার দেশাত্মবোধ সম্পর্কিত জ্ঞান? প্রশ্ন জাগে দেশ বড় না মানবিকতা বড়? প্রশ্ন জাগে ধর্ম বড় না মানবিকতা বড়? প্রশ্ন জাগে এ কোন ভবিষ্যত আমরা বাচ্চাটিকে দিলাম?
মানবিকতার কোন স্তরে ব্রেণওয়াশ হলে কফি হাতে অন্য দেশে ফেলা বোমা টিলায় বসে দেখা যায়?
মানবিকতার কোন স্তরে ব্রেণওয়াশ হলে কফি হাতে অন্য দেশে ফেলা বোমা টিলায় বসে দেখা যায়?
সামনে পেলে আপনাদের প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতে ইচ্ছে করে, “ আপনাদের কি সন্তান নেই? আপনাদের কি মানবিকতা শব্দটির সাথে পরিচয় নেই? আপনারা কোন এলিমেন্ট দিয়ে তৈরি?”
বহুযুগ আগে থেকে স্পিরিচুয়্যাল গুরুরা বলে চলেছেন আমরা সকলেই পঞ্চভুতের ফসল। সন্দেহ হয় আপনারা কোন পঞ্চভুতের ফসল। হয়তবা বিজ্ঞানীরা আপনাদের শরীর খুঁড়ে অন্যকিছু বার করবেন!
মানছি একহাতে তালি বাজে না, দুটি হাতের প্রয়োজন হয় তালির নিমিত্তে। তবুও কিন্তু পরন্তু!!!
আমরা মহাভারতে দুর্যোধনকে যেমন বলি - ধিক! ঠিক সমভাব নিয়ে আজ বলি ধিক, মানুষ ধিক!! হে রাষ্ট্রনায়ক আপনাদের কিছু বলার শক্তি তো আমাদের সাধারণের নেই তাই কাঁদি আর টিভিটা বন্ধ করে নিজেই নিজেকে বলি ধিক মানবসমাজ ধিক!!!
বহুদিন ধরে খুঁজছি এক স্যারের বলা লাইন -আজ অবধি মানুষ নিজের জন্য ছাড়া কারোও জন্য কি করেছে, কিছুই করতে পারে নি, এমনকি কুকুরের চেইনটাও সে নিজের জন্যই বানিয়েছে।
খুঁজেছি, গত একদশকেরও বেশি সময় ধরে খুঁজেছি। বার করতে পারিনি এত টেকনোলজির ভিড়েও। কিন্তু আজ বলতে ইচ্ছে করে বোতাম টিপে পৃথিবীকে শশ্মান বানানোর টেকনোলজিতো আমরা তৈরি করেছি! বানিয়েছিতো মা ধরিত্রির জন্য রকেট লঞ্চার, ক্যামিক্যাল বম্ব, নিউক্লিয়ার বম্ব! আজই খবরে পড়লাম কোনও এক বিজ্ঞানী বলেছেন আর বছর কুড়ি পর আমরা বার করে ফেলব অন্য কোথাও প্রাণের সন্ধান!
বলি হে বিজ্ঞানী মশাই আপনাদের ইন্ট্যালেচুয়্যাল এবিলিটির প্রতি বিন্দুমাত্র সন্দেহ প্রকাশ না করে অনুরোধ করি - পারেন কি বোতাম টিপে হিউম্যান কনসাইন্স নামক ডেটাটি ফিড করতে সমগ্র মানব সত্তায়?
Comments