জোছোনা করেছে আড়ি......
বাপ-মা সাধ করে নাম রেখেছিল অলীক। কোন কল্পনায় গোটা জীবনটাই কাটবে ভেবেছিল জানিনা। অলীক গান-কবিতা-গল্প পড়েছে ও লিখেওছে অনেক। একসময় লিটল ম্যাগ-এ নিয়মিত ছাপা হতো। বাপি ছিলেন প্রাক্টিক্যাল মানুষ বুঝলেন ছেলে এপথে গেলে গোল্লায় যাবে নামলেন ইন্টেলেক্ট বধে। প্রথমে ভালবেসে, তারপরে প্রায় জোর করেই। বাপির মোটিভেট করার পদ্ধতিই অবাক করার মত। শুধু উদাহরণে ভরা- প্রথমে পাড়ার তথাকথিত সফল দাদা, তারপর বয়সে ছোটো কাজিন, তারপরেও কিছু না হলে পাড়ার রকবাজ ছেলেটির সাথে কম্পেয়ার। ইমোশান-ইন্টেলেক্ট-এর মার্ডার এদেশে হামেশাই ঘটে, মধ্যবিত্ত সমাজে অহরহ। অলীক তারই এক নমুনা মাত্র।
অলীক যে মার্ডার হয়েছে সে তা বোঝে হবার পর। মিষ্টি আবদারে বাপ-মা তার ভেতর থেকে শিল্প ছিনিয়ে নেবার তাল করেছিল বুঝতে পারে নি। পারলেও অবশ্য কিছুই করতে পারতো না। টাকা যার জোর তার - এ বিষয়টা অনেক আগেই বুঝেছিল। বোঝার বাকি যেটুকু ছিল তা লিট্ল ম্যাগ-এ লেখা ছাপাতে যেয়ে বুঝে যায়। সেখানে সবাই সৃষ্টির হর্তা-কর্তা-বিধাতা। কতবার অলীক বালিশে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছে। কতবার মোনার কাছে হেরে পালিয়ে এসেছে। পালিয়ে আসা না বলে পালিয়ে বাঁচা বলা ভাল। মোনা অলীকের গার্ল-ফ্রেন্ড। ইউনিভার্সিটির সহপাঠী। ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী। বাবা বিখ্যাত পেইন্টার, মা বড় স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল। অলীকের তখন সবচেয়ে বড় পরিচয় মোনা’র বয়ফ্রেন্ড! সোসাইটির আপার ক্লাসে বিচরন। সে নিজেও অবাক হতো একেক সময়, বলেওছে, পরে বোঝে জীবনে যা পাবার তা পাবেই। কথাটা গৌরীদি বারবার বলত।
আজ এত বছর পরেও শুধু ভুলতে পারে না গৌরীদির কথা। সেই শুধু বলত ভাই সব কিছুর মাঝেও তোর কবিতা বাঁচিয়ে রাখিস। কবিতাই জীবন। সেই গৌরীদিই একদিন হঠাৎ ঝপ করে হারিয়ে গেল, বেশ কিছুদিন খোঁজখোঁজ রব। তারপর শুরু হলো পাড়ার কেচ্ছা। কিন্তু মধ্যবিত্তের রব স্থায়ী হয় দিনেকের। তারপর সব ভুলে মেরে দেয়। সেই বছরই প্রথম চোখের জল ফেলেছিল ভাইফোঁটায়। আজও মন উদাস হয়ে যায় ঐ সময়। কিকরে অলীক ভোলে একসাথে শাল জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া, শালের বীজ বস্তায় ভরে বিক্রি করে ঝালমুড়ি-চপ খাওয়া, ফরেস্ট অফিসের তারকাঁটার বেড়ার ফাঁক দিয়ে লুকিয়ে ফুলের টব চুরি করা। সবইতো দুজনে একাকী।
একলা জগৎ জয় করা যায় না অলীক। সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। আমারওতো একটা সোসাইটি আছে। সেখানে কি বলব? আমার হাসব্যান্ড লিট্ল-ম্যাগ-এর কবি। মোনা বাড়ির লনে হাত ধরে বলেছিল।
কবিতা বেরোয়নি সেসময়। কেঁদেছিল, শুধুই কেঁদেছিল অলীক। কান্নায় ভর করেছিল সেসময়। সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে উথাল-পাথাল জীবনে ছন্দ ফিরিয়ে এনেছিল সে। তারই এক গুজরাতী পাড়াতুতো বন্ধুর সাহায্যে।
প্রথম যেদিন শেয়ার মার্কেটের খবরটা মোনা’র বাড়ি বয়ে দিতে গেছিল সেদিনের কথাটা এখনও মনে আছে। দুপুর রোদে রাস্তায় কুকুরও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না, সেই সময় রাগ করে মোনা’র বাড়ির নিশ্চিত এয়ারকন্ডিশনারের আরাম ছেড়ে বাইরে পা রাখে। মোনা বারবার ডেকেছিল অলি এখন বেরিও না, বেরিও না, বেরিও না.. । রোদ্দুরে পুড়ে যাবে। শোনে নি। তবেই না পেয়েছিল রাস্তায় সিগন্যালে বাঝছে পীযূসের গলায় “ পিনাকীতে লাগে টংকার ”। অবাক হয়েছিল গানটা শুনে। এযেন তারই জন্যে বাজলো এসময়। পিনাকী ও টংকার এই দুই শব্দই প্রাসঙ্গিক এই মুহূর্তে তার জীবনে। দুটি শব্দই প্রতীকি শেয়ার বাজারের সদ্য পা রাখা কারবারির কাছে।
আজ এত বছর বাদে বড় বাড়ি-গাড়ি-বৌ থেকেও অলীক ভালবাসে একাকী সময় কাটাতে। ভালবাসে গৌরীদির কথা ভাবতে। হারানো পিনাকীর টংকার ফেরানোর চেষ্টা করতেই হবে ভেবে স্টাডিরুমে সাদা কাগজ টেনে নেয়…. … শুধু বসেই থাকে। বেরোয় না কিছুই।
অলীক যে মার্ডার হয়েছে সে তা বোঝে হবার পর। মিষ্টি আবদারে বাপ-মা তার ভেতর থেকে শিল্প ছিনিয়ে নেবার তাল করেছিল বুঝতে পারে নি। পারলেও অবশ্য কিছুই করতে পারতো না। টাকা যার জোর তার - এ বিষয়টা অনেক আগেই বুঝেছিল। বোঝার বাকি যেটুকু ছিল তা লিট্ল ম্যাগ-এ লেখা ছাপাতে যেয়ে বুঝে যায়। সেখানে সবাই সৃষ্টির হর্তা-কর্তা-বিধাতা। কতবার অলীক বালিশে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছে। কতবার মোনার কাছে হেরে পালিয়ে এসেছে। পালিয়ে আসা না বলে পালিয়ে বাঁচা বলা ভাল। মোনা অলীকের গার্ল-ফ্রেন্ড। ইউনিভার্সিটির সহপাঠী। ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী। বাবা বিখ্যাত পেইন্টার, মা বড় স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল। অলীকের তখন সবচেয়ে বড় পরিচয় মোনা’র বয়ফ্রেন্ড! সোসাইটির আপার ক্লাসে বিচরন। সে নিজেও অবাক হতো একেক সময়, বলেওছে, পরে বোঝে জীবনে যা পাবার তা পাবেই। কথাটা গৌরীদি বারবার বলত।
আজ এত বছর পরেও শুধু ভুলতে পারে না গৌরীদির কথা। সেই শুধু বলত ভাই সব কিছুর মাঝেও তোর কবিতা বাঁচিয়ে রাখিস। কবিতাই জীবন। সেই গৌরীদিই একদিন হঠাৎ ঝপ করে হারিয়ে গেল, বেশ কিছুদিন খোঁজখোঁজ রব। তারপর শুরু হলো পাড়ার কেচ্ছা। কিন্তু মধ্যবিত্তের রব স্থায়ী হয় দিনেকের। তারপর সব ভুলে মেরে দেয়। সেই বছরই প্রথম চোখের জল ফেলেছিল ভাইফোঁটায়। আজও মন উদাস হয়ে যায় ঐ সময়। কিকরে অলীক ভোলে একসাথে শাল জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া, শালের বীজ বস্তায় ভরে বিক্রি করে ঝালমুড়ি-চপ খাওয়া, ফরেস্ট অফিসের তারকাঁটার বেড়ার ফাঁক দিয়ে লুকিয়ে ফুলের টব চুরি করা। সবইতো দুজনে একাকী।
একলা জগৎ জয় করা যায় না অলীক। সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। আমারওতো একটা সোসাইটি আছে। সেখানে কি বলব? আমার হাসব্যান্ড লিট্ল-ম্যাগ-এর কবি। মোনা বাড়ির লনে হাত ধরে বলেছিল।
কবিতা বেরোয়নি সেসময়। কেঁদেছিল, শুধুই কেঁদেছিল অলীক। কান্নায় ভর করেছিল সেসময়। সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে উথাল-পাথাল জীবনে ছন্দ ফিরিয়ে এনেছিল সে। তারই এক গুজরাতী পাড়াতুতো বন্ধুর সাহায্যে।
প্রথম যেদিন শেয়ার মার্কেটের খবরটা মোনা’র বাড়ি বয়ে দিতে গেছিল সেদিনের কথাটা এখনও মনে আছে। দুপুর রোদে রাস্তায় কুকুরও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না, সেই সময় রাগ করে মোনা’র বাড়ির নিশ্চিত এয়ারকন্ডিশনারের আরাম ছেড়ে বাইরে পা রাখে। মোনা বারবার ডেকেছিল অলি এখন বেরিও না, বেরিও না, বেরিও না.. । রোদ্দুরে পুড়ে যাবে। শোনে নি। তবেই না পেয়েছিল রাস্তায় সিগন্যালে বাঝছে পীযূসের গলায় “ পিনাকীতে লাগে টংকার ”। অবাক হয়েছিল গানটা শুনে। এযেন তারই জন্যে বাজলো এসময়। পিনাকী ও টংকার এই দুই শব্দই প্রাসঙ্গিক এই মুহূর্তে তার জীবনে। দুটি শব্দই প্রতীকি শেয়ার বাজারের সদ্য পা রাখা কারবারির কাছে।
আজ এত বছর বাদে বড় বাড়ি-গাড়ি-বৌ থেকেও অলীক ভালবাসে একাকী সময় কাটাতে। ভালবাসে গৌরীদির কথা ভাবতে। হারানো পিনাকীর টংকার ফেরানোর চেষ্টা করতেই হবে ভেবে স্টাডিরুমে সাদা কাগজ টেনে নেয়…. … শুধু বসেই থাকে। বেরোয় না কিছুই।
Comments