ঝরা পাতা
বিগত কয়েকদিন একটা চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল- লিখতে হবে। কিন্তু কি তা ঠিক করে ওঠা হয় নি। ভেবে দেখলে নতুন কিছু উপাদান জীবনে এসে পৌঁছয় নি। পুরোনোকে ফেলে এগোনোর নামই জীবন। পুরোনো তাই ঝরা পাতা। সকলে মাড়িয়ে যেতে চায়, কিন্তু বাস্তবে অসম্ভব। সে মেশে মাটির সাথে। তার যোগ মাটির সাথে। বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে ফুল ফোটে ও তা ফোটার মুহূর্ত সকলেরই অজানা রয়ে যায়। ছেলেবেলায় অনেক অপেক্ষায় থেকেছি যদি ভোরের আলোয় ধরা পড়ে, যদি মাঝরাতে ধরা পড়ে। নাহ্ পারিনি। কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়া গোপন প্রাকৃতিক মুহূর্ত, অধরা থাকায় ভাল। যদিও অনেকেই দ্বিমত প্রকাশ করবেন। যাক্ আমি থাকি আমার দলে।
দিনদুয়েক আগে স্থান পরিবর্তনের কারনে নতুন জায়গায় নতুন পরিবেশে পৌঁছেছি। আজ সকালে ঘুম ভাঙলে পাশের একটি পার্কে উপস্থিত হই। আসার দিন থেকেই পার্কটি মন টানছিল। আজ তাই মনের টানে। অবাক হলাম ছেলে-মেয়ে-বৌ-বুড়ি-বুড়ো নির্বিশেষে দৌড়চ্ছে। অর্থাৎ না দেখে না ভেবে হেঁটে চলেছে। কেউ বা দ্রুত, কেউ ধীরে। আবার কেউ ব্যাস্ত নাক টেপাটেপির খেলায়। এক বিশেষ বাবার আশীর্বাদ প্রাপ্ত। কোনোও এক সময় পড়েছিলাম - অ্যানালিটিক্যাল ব্রেন ডাস নাথিং। আজ উপলব্ধি হল নিজে কোন গোত্রের। কোনোও কাজ নেই ঠিক নয়, কাজ আছে অথচ তাড়া নেই। ঢেউএর উল্টোদিকে হাঁটার প্রবনতা। ভাল লাগল সকাল ও সকলের প্রস্তুতি। শুধু অবাক হলাম এক থুথ্বুড়ে বুড়োকে দেখে, গেটের পাশে দাড়িয়ে উচ্ছে, লাউ, গাজরএর জুস বিক্রি করছেন। পাশে দাড়ালাম, হেসে এক গ্লাস উচ্ছের রস চাইলাম। প্রথম তেতো খাওয়া। তাও যেচে। কে জানে হয়ত আমিও কোনোওদিন ওদের দলে ভিড়ে ওদের মত কেজো মানুষে বদলে যাব।
মনে পড়ে গেল মায়ের চিৎকার- বাবান উচ্ছেটা ফেলবে না। আজ তো বলার কেউ নেই। ঝরা পাতা মিশে গেছে প্রকৃতির কোলে।
Comments