ধুপখালির মেলা ও ক্ষেপুর গান
ছেলে মা'র নেওটা। যতই ক্ষেপু বলুক সকলে ক্ষেপুর ভ্রুক্ষেপ নেই - মা অন্তপ্রাণ। আজ সেই মাও নেই, ক্ষেপুও থেকেও নেই। গান রয়ে গেছে, মা'র গান। এখন সে মেলায় যায় গান গায় একলা ঘোরে। বাপের খবর রাখে যদিবা দেখে না সে। যদিও বাপের ওপর দরদের কমতি নেই। বছর বছর কমলির হাতে টাকা পাঠাই দেয়। কমলি ক্ষেপুর ছোঁড়াবামনি, মানে ছোঁড়া বয়সের বিয়ানের লগে কথা হওয়া মাইয়্যা। দুজনে খেলছেও অনেক। মা'র যাওনের পর ক্ষেপুর সব গেল। আর কমলি সেই কোন ছেলেমানিষ বয়স হতে ক্ষেপুর সাথে ঘর করবে বলে দাওয়ায় বসেই দিন কাটায়, তারতো আর কেউ নেই। বাপ-মা গেছিল সেই ছেমড়া বয়সে কলেরায়। সে এক সময় গেছে - গ্রামকে গ্রাম মড়কে লোকের প্রাণের ক্ষতি হইছে। সারি সারি মড়ার মেলা। ক্ষেপুর মায় তারে টেনে আনে। মায় ছিল এক ডাক্তারসাহেবের কাজের মানিষ , বলেছিল - আমার ক্ষেপুর সাথে বিয়ান দেমু।
সেই থেকুন ক্ষেপু-কমলি দুই জুড়ি, খেলার সাথী। সাথে নাওয়া-খাওয়া। এমনকি অনেক বড় বয়স পর্যন্ত্য দুটিতে একখাইটে শুয়েছেও। শরীরের ডাক আসার আগেই কমলির তফাৎ যাওনের শুরু। ধীরে ধীরে ক্ষেপুও কখন সইরা গেছে কমলি টেরও পাই নাই। মা'র যাওনের সময় ক্ষেপু লাগে পাখি ধরনের নেশা। সেই কোন বইন্যে-বাদাড়ে ঘুইরছে আর পাখির পিছন ধরছে তার নাই ঠিক। আর শুধুই এই মেলা আর সেই মেলা। পাখি ধরনের নেশা তাকে জঙ্গলে ট্যাইনা লইয়্যা গেছে কমলির থেকেন দূরে। অনেক বড়ন লোকের লগে ক্ষেপুর আলাপ হইস্যে পাখি ধরার লগে। সেই বাবুরা সকল কি সব ছবি তুলনের লগে ক্ষেপুর খোঁজ করে আর ক্ষেপু হারায় যায় প্রায় মাস খানিকের লগে। আর যখন ফিরে কোঁচড়ে থাকে একগুচ্ছ টাকা। বলে - সব বাবুরা দিইছে।
এক রেতে রেঞ্জারবাবুর অফিসের লুক আইলেন ঘরে, ইকথা-সিকথার পর হিয়ান জঙ্গলের হিসাব দিলেন। সুজা-সুজা হিসাবে বলেনঃ ক্ষেপু উই বাবুদের লগে তুই কাম করিস তো আমাদের লগে কেনে নই? আমরাও তুরে পয়সা দিব, পিনসানও পাবি বয়স হুলে। আমাদের জঙ্গলের পাখির হিসাব তুই রাখিস। তুওর তো সব জমিন-জঙ্গলই চিনা, কেনে তুই পাখি বেচার দলের সাথে হাত মিলাস।
- পাখি বেচার দল!! মতলব?!!
- তুই জানিস নই ক্ষেপু উয়ারা পাখি ধরনের লগে প্রথমে ফোটো উঠাই যায়, পরে আসেন পাখি ধরনের লগে। দেশের বাইরে বেই্যচা অনেক টাকা করেন রে ঐ বাবুরা। সরকারি হিসাবে উটা পাপ।
- তো...... অত বড় বাবুরা এলে আপনারা কেনে কিছু বলেন নাই? আমি তো ছোটো ছিনা, পয়সার লগে কাম করি। সাহিবদের ফরমাস ক্ষেট্টেই আমার দিন কাটে। সাহিবদের বিবিদের পসন্দ হইল্যে একটু বেশি পাই।
- তুই বাবুদের পাখি ধরনের লগে পরের বার গিয়া আমারে খবর দিতে পারিস? কানুন সাহিব বলেন মিষ্টি সুরে।
হঁওও বইল্যা মাথা হিলায় ক্ষেপু।
হেঁই করলি ক্ষেপি ভুল, এক্ষন ক্ষেপু বুঝে। বড় তো বড়ই। সি তো ঠিক ভুল যাই হইন না কেনে - বাঁচেন তো বটেই। মাঝের-মাঝে হলো গিয়া ক্ষেপুর ক্ষত, বুঝলোই না কি হলোন সরকারি বাবুদের হিসাব। জঙ্গল হতে ক্ষেপু সোজ্জা গিয়া উঠে হাজতে। সি বড়োন ক্ষারাপ দিন গেছে গিয়া বচ্ছর দুয়েক। চোর বলে দিল বিবাক রেঞ্জারবাবু!
কমলি আছিল বলি হাত-পা পড়া বাপের রক্ষ্যে! আর কুনো দিন ক্ষেপু জঙ্গলমুখো হই নাই! এখন ক্ষেপু মেলায়-মেলায় গান গায় আর লুক দেখে আর গানের কাহান কয়।
শুধু একটাই কথা কাউকেই বলে নাই - ভিতরেই রাখছে শরীলের - এখন সে কাউর লগে সামনে দাইড়ালেই হরহর কইরা পুরান ভিতর জুইড়্যা যা কিছুন আছে দেখতে পায়। চারিদিকেন কতই না জঞ্জাল মানিষের ভিতর। সারাটা শরীল চিড়বিড় কইরে ওঠে। বড্ড যন্তনা পাই। তাই ক্ষেপু ইক্ষন শুধুই মেলায়-মেলায় গিয়া গাইয়ে বেড়ায় -
সেই থেকুন ক্ষেপু-কমলি দুই জুড়ি, খেলার সাথী। সাথে নাওয়া-খাওয়া। এমনকি অনেক বড় বয়স পর্যন্ত্য দুটিতে একখাইটে শুয়েছেও। শরীরের ডাক আসার আগেই কমলির তফাৎ যাওনের শুরু। ধীরে ধীরে ক্ষেপুও কখন সইরা গেছে কমলি টেরও পাই নাই। মা'র যাওনের সময় ক্ষেপু লাগে পাখি ধরনের নেশা। সেই কোন বইন্যে-বাদাড়ে ঘুইরছে আর পাখির পিছন ধরছে তার নাই ঠিক। আর শুধুই এই মেলা আর সেই মেলা। পাখি ধরনের নেশা তাকে জঙ্গলে ট্যাইনা লইয়্যা গেছে কমলির থেকেন দূরে। অনেক বড়ন লোকের লগে ক্ষেপুর আলাপ হইস্যে পাখি ধরার লগে। সেই বাবুরা সকল কি সব ছবি তুলনের লগে ক্ষেপুর খোঁজ করে আর ক্ষেপু হারায় যায় প্রায় মাস খানিকের লগে। আর যখন ফিরে কোঁচড়ে থাকে একগুচ্ছ টাকা। বলে - সব বাবুরা দিইছে।
এক রেতে রেঞ্জারবাবুর অফিসের লুক আইলেন ঘরে, ইকথা-সিকথার পর হিয়ান জঙ্গলের হিসাব দিলেন। সুজা-সুজা হিসাবে বলেনঃ ক্ষেপু উই বাবুদের লগে তুই কাম করিস তো আমাদের লগে কেনে নই? আমরাও তুরে পয়সা দিব, পিনসানও পাবি বয়স হুলে। আমাদের জঙ্গলের পাখির হিসাব তুই রাখিস। তুওর তো সব জমিন-জঙ্গলই চিনা, কেনে তুই পাখি বেচার দলের সাথে হাত মিলাস।
- পাখি বেচার দল!! মতলব?!!
- তুই জানিস নই ক্ষেপু উয়ারা পাখি ধরনের লগে প্রথমে ফোটো উঠাই যায়, পরে আসেন পাখি ধরনের লগে। দেশের বাইরে বেই্যচা অনেক টাকা করেন রে ঐ বাবুরা। সরকারি হিসাবে উটা পাপ।
- তো...... অত বড় বাবুরা এলে আপনারা কেনে কিছু বলেন নাই? আমি তো ছোটো ছিনা, পয়সার লগে কাম করি। সাহিবদের ফরমাস ক্ষেট্টেই আমার দিন কাটে। সাহিবদের বিবিদের পসন্দ হইল্যে একটু বেশি পাই।
- তুই বাবুদের পাখি ধরনের লগে পরের বার গিয়া আমারে খবর দিতে পারিস? কানুন সাহিব বলেন মিষ্টি সুরে।
হঁওও বইল্যা মাথা হিলায় ক্ষেপু।
হেঁই করলি ক্ষেপি ভুল, এক্ষন ক্ষেপু বুঝে। বড় তো বড়ই। সি তো ঠিক ভুল যাই হইন না কেনে - বাঁচেন তো বটেই। মাঝের-মাঝে হলো গিয়া ক্ষেপুর ক্ষত, বুঝলোই না কি হলোন সরকারি বাবুদের হিসাব। জঙ্গল হতে ক্ষেপু সোজ্জা গিয়া উঠে হাজতে। সি বড়োন ক্ষারাপ দিন গেছে গিয়া বচ্ছর দুয়েক। চোর বলে দিল বিবাক রেঞ্জারবাবু!
কমলি আছিল বলি হাত-পা পড়া বাপের রক্ষ্যে! আর কুনো দিন ক্ষেপু জঙ্গলমুখো হই নাই! এখন ক্ষেপু মেলায়-মেলায় গান গায় আর লুক দেখে আর গানের কাহান কয়।
শুধু একটাই কথা কাউকেই বলে নাই - ভিতরেই রাখছে শরীলের - এখন সে কাউর লগে সামনে দাইড়ালেই হরহর কইরা পুরান ভিতর জুইড়্যা যা কিছুন আছে দেখতে পায়। চারিদিকেন কতই না জঞ্জাল মানিষের ভিতর। সারাটা শরীল চিড়বিড় কইরে ওঠে। বড্ড যন্তনা পাই। তাই ক্ষেপু ইক্ষন শুধুই মেলায়-মেলায় গিয়া গাইয়ে বেড়ায় -
চোখ আছে তাই দেখতে নারি ....
এতো জঞ্জাল কেমনি ধরি ....
মানিষরে তুই সাফি দিবি ...
চকচকায়ে বাড়ি যাবি..
এতো জঞ্জাল কেমনি ধরি ....
মানিষরে তুই সাফি দিবি ...
চকচকায়ে বাড়ি যাবি..
Comments