বিকেল থেকেই রাস্তার ধারের গ্রীল ধরে বসে থাকে লিপি। মাঝেমধ্যে খেলেও, হৈ চৈও করে, তবুও সবার অলক্ষে অপেক্ষায় থাকে বাপি-মা"র। দুজনেই অফিসে; কাজেই লিপি'র ডে-কেয়ার। তার ওপর ওকে মেন্টালি একটু পিছিয়ে থাকা বাচ্চা হিসাবেও গন্য করা হয়। সবাই বলে ও বাপি-মা"র সামাজিক লজ্জা। লিপি'র এবিষয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই। বিকেল থেকে চলে অপেক্ষা, ধীরেধীরে স্ট্রিট লাইট জ্বলে, শাঁখ বাজে এধার-ওধার, আর বাড়ে লিপি'র অপেক্ষা। সাঁঝবেলার অপেক্ষা।
সব বাচ্চা আজ চলে গেছে। ডে-কেয়ারের আন্টি একটু রাগীরাগী মুখেই তাকাচ্ছে, কিন্তু লিপি কি করে! তার সন্ধেতো বাপি-মা আসার পর শুরু হয়, তা সে রাত আটটা কি নটা।
আশিস অফিস ফেরতা আজ ডক্টর বাসুর চেম্বারে গেছে। রেগুলার মিটিং। লিপি'র খবরাখবর আদানপ্রদান। ছেলেবেলায় লিপি খাট থেকে পড়ে মাথায় চোট পেয়েছিল। তখন বয়স প্রায় দুই-আড়াই হবে। তারপরেই সব গড়বড় হতে শুরু করে। কথা জড়িয়ে যায়। মাঝেমাঝেই হারিয়ে যায় কোথায়। একলা থাকে। ডক্টর বাসু বলেছেন বাচ্চাদের সাথে রাখতে তাই ডে-কেয়ার। কিন্তু সেখানেই বা কত সহ্য করবে। রেগে যায় অনেকসময়। রেবতীকে বলেছিল একবার চাকরিটা ছেড়ে দিতে, কিন্তু বারবার বলা যায়না। তবে গত কয়েকমাসে লিপি'র কিছু উন্নতি লক্ষ্য করেছে। এবারের ব্রেণ স্ক্যান রিপোর্ট বলছে ভাল। এটলিস্ট ডক্টর বাসুতো তাই বলছেন। কে জানে সন্ধেবেলার কথা! তখন আবার একটা শাঁখের আওয়াজও পাওয়া গেল। জ্যোতির ফোন এসেছিল চেম্বারেই, ধরেনি। ছেলেবেলার বন্ধু। তবে বড়বেলায় বদলে গেছে। একবার ভাবে ফোন করে, কিন্তু থেমে যায়। খেজুরে আলাপ ভাল লাগেনা। সন্ধের পর থেকে লিপি'র সাথেই সময় কাটানো পছন্দ করে। গান শোনায়, নিজেও শোনে। আত্মজের কথা ভেবে বাইকের স্পিড বাড়ায় ...
আজও ট্যাক্সি করতে হলো রেবতীকে। অফিসেই দেরি হয়েছে। বস বদলেছে। বড্ড জ্বালাচ্ছে। চাহনিটাও বাজে। বিশ্রী ভাবে গিলতে থাকে। অবাক লাগে রেবতীর। বিয়ের এত বছর পরেও যত্নশীল না হয়েও কিকরে! নিজের দিকে তাকানোর সময় কৈ। ছেলের জন্য টাকা জমাচ্ছে। তাই দুজনার অফিস করা। আশিস বলেছিল চাকরিটা ছেড়ে দিতে কিন্তু ভয় হয়। হাত ঘড়ির দিকে নজর পড়ে। ঘড়ি দেখে ভাবে আজকেও ডে-কেয়ারে কথা শুনতে হবে। ছেলের মুখটা মনে পড়ে। নির্ঘাত গ্রীলের সামনে বসে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করে। ভাবে শেষ কোনোও এক সুমধুর সন্ধের কথা। মনেমনে স্থিরও করে ফেলে চাকরী ছাড়ার কথা।
- ম্যাডাম
ড্রাইভারের ডাকে হুঁস ফেরে, সামনেই ডে-কেয়ার। লিপি'র মুখে খুশির ঝলক। কেন যে লোকে বলে মেন্টালি রিটার্ডেড !
সব বাচ্চা আজ চলে গেছে। ডে-কেয়ারের আন্টি একটু রাগীরাগী মুখেই তাকাচ্ছে, কিন্তু লিপি কি করে! তার সন্ধেতো বাপি-মা আসার পর শুরু হয়, তা সে রাত আটটা কি নটা।
আশিস অফিস ফেরতা আজ ডক্টর বাসুর চেম্বারে গেছে। রেগুলার মিটিং। লিপি'র খবরাখবর আদানপ্রদান। ছেলেবেলায় লিপি খাট থেকে পড়ে মাথায় চোট পেয়েছিল। তখন বয়স প্রায় দুই-আড়াই হবে। তারপরেই সব গড়বড় হতে শুরু করে। কথা জড়িয়ে যায়। মাঝেমাঝেই হারিয়ে যায় কোথায়। একলা থাকে। ডক্টর বাসু বলেছেন বাচ্চাদের সাথে রাখতে তাই ডে-কেয়ার। কিন্তু সেখানেই বা কত সহ্য করবে। রেগে যায় অনেকসময়। রেবতীকে বলেছিল একবার চাকরিটা ছেড়ে দিতে, কিন্তু বারবার বলা যায়না। তবে গত কয়েকমাসে লিপি'র কিছু উন্নতি লক্ষ্য করেছে। এবারের ব্রেণ স্ক্যান রিপোর্ট বলছে ভাল। এটলিস্ট ডক্টর বাসুতো তাই বলছেন। কে জানে সন্ধেবেলার কথা! তখন আবার একটা শাঁখের আওয়াজও পাওয়া গেল। জ্যোতির ফোন এসেছিল চেম্বারেই, ধরেনি। ছেলেবেলার বন্ধু। তবে বড়বেলায় বদলে গেছে। একবার ভাবে ফোন করে, কিন্তু থেমে যায়। খেজুরে আলাপ ভাল লাগেনা। সন্ধের পর থেকে লিপি'র সাথেই সময় কাটানো পছন্দ করে। গান শোনায়, নিজেও শোনে। আত্মজের কথা ভেবে বাইকের স্পিড বাড়ায় ...
আজও ট্যাক্সি করতে হলো রেবতীকে। অফিসেই দেরি হয়েছে। বস বদলেছে। বড্ড জ্বালাচ্ছে। চাহনিটাও বাজে। বিশ্রী ভাবে গিলতে থাকে। অবাক লাগে রেবতীর। বিয়ের এত বছর পরেও যত্নশীল না হয়েও কিকরে! নিজের দিকে তাকানোর সময় কৈ। ছেলের জন্য টাকা জমাচ্ছে। তাই দুজনার অফিস করা। আশিস বলেছিল চাকরিটা ছেড়ে দিতে কিন্তু ভয় হয়। হাত ঘড়ির দিকে নজর পড়ে। ঘড়ি দেখে ভাবে আজকেও ডে-কেয়ারে কথা শুনতে হবে। ছেলের মুখটা মনে পড়ে। নির্ঘাত গ্রীলের সামনে বসে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করে। ভাবে শেষ কোনোও এক সুমধুর সন্ধের কথা। মনেমনে স্থিরও করে ফেলে চাকরী ছাড়ার কথা।
- ম্যাডাম
ড্রাইভারের ডাকে হুঁস ফেরে, সামনেই ডে-কেয়ার। লিপি'র মুখে খুশির ঝলক। কেন যে লোকে বলে মেন্টালি রিটার্ডেড !
Comments