অবাক করলে তুমি!!!

মাঝরাতের ফোনটা সব বিগড়ে দিয়ে গেল।  কেন যে লোকে ভুলে যায় তারও ব্যাক্তিগত জীবন আছে।  কিইবা এমন দরকার!  ফোনটা রেগেই ধরেনি।  পরে ম্যাসেজ এল সরি, বাই মিসটেক।  প্লিজ ইগনোর।  হলে কি হবে ঘুমের দফারফা হয়ে গেছে।  অগত্যা...

প্রিয় কাজ।  বই।  বেশিক্ষন বসতে পারে না টানা এটা লক্ষ্য করেছে অনীক।  তবুও দীর্ঘশ্বাস-এর থেকে ভাল।  কিইবা হয় জীবনের পচনের কথা ভেবে।  পিছুটান কিছুই দেয় না।  তাও পাশে ঘুমিয়ে থাকা ছেলের নিষ্পাপ মুখ দেখে কষ্ট হয়।  ভীষণ কষ্ট হয়!  মাঝরাতে আর কার সাথে শেয়ার করে বই ছাড়া।  লিখতেও পারে না ছাই!  যে তার সাহায্যে কিছুটা কষ্ট কমে।  বোঝে বেরোনো দরকার।  আজ আরোও বেশি ছটপটানি।  অন্যান্য বছরের কথা মনে পড়ে যায়।  এবছর তো প্রথম কেউ বলবে না।  ভাবে ছোট্ট ছেলেকে দিয়েই বলিয়ে নেবে- হ্যাপি বার্থ্ডে!  বালিশ আঁকড়ে পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে ফের।


সকালের অফিসের ব্যাস্ততা।  তারই ফাঁকে চা গেলা।  একটু দেরিই হয়ে গেছে উঠতে।  ভাল লাগে না।  পুরোনো দিনের কথা ঘাঁটতে ইচ্ছে করছে।  প্রথম দেখা।  প্রথম ছোঁয়া।  প্রথম চোখে চোখ পড়া।  হাতে হাত রেখে ঘোরা।  তারই মাঝে ভীষণ লড়াই।  সংসারের লড়াই!  কত স্বপ্ন.....  ঘর-দোর, গাড়ি-বাড়ি, এমনকি ছেলের বিয়ে অবধি!  ছেলে এখনও শুয়ে।  মোবাইলটা সুর করে বেজে ওঠে।  নিজের নয় ওর।  এখনও লাইন ডিসকানেক্ট করে নি।  মন চায় নি।  কে জানে ছেলে কি চেয়ে বসে!  হয়ত বলে বসল -- মাম্মামের ফোনটা চাই! 


ফোনটা ধরতে গিয়ে হাত কেঁপে ওঠে।  ধরা আর হয় না। এ যে বার্থ্ডে উইশ।  ভাল করে দেখে... অ্যালার্ম দেওয়া।  দিন-ক্ষন মেনে!  যাবার আগেও মানুষ নিজের ভাল লাগার মানুষের কথা ভেবে কাজ করে গেছে।  যন্ত্রণার মাঝেও মানুষ ভাবে!!! 


ভেতরটা দমকে-দমকে কেঁদে ওঠে।  অব্যক্ত যন্ত্রণা!  তারও মাঝে ভাললাগে।  ভাল লাগে ভেবে এবারেও প্রথম উইশ্টা ওর।


অবাক ভালবাসা!!!  পরানটা যায় জ্বলিয়া  রে....  গানের মর্মার্থ পরিস্কার হয়।   


দূরে কোথাও পুরোনো কোনোও গানের সুর বাজেঃ  সুন্দরী কমলা নুপুর পায়ে রুনুঝুনু রুনুঝুনু নাচে রে।


সুর তো অধরা, দেখাও যায় না।  সে থাকে কখনও কাছে,  কখনও বা দূরে!  বহুদূরে!  




 




Comments

Popular Posts